মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায়

আমরা অনেকেই মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় খুঁজে থাকি। আর অনেক সময় মশার কামড়ের কারণে আমাদের শরীরে দাগ সৃষ্টি হয়। এই দাগগুলো অনেক সময় আমাদের দৃষ্টিতে দেখতে খারাপ লাগে। সেই জন্য মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় জানা থাকলে খুব সহজে আমরা সে দাগ দূর করতে পারি। আজকের এই আর্টিকেলে মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় বিস্তারিত আলোচনা করব।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় গুলো জেনে নেওয়া যাক। উক্ত বিষয়টি জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায়

মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায়

আমাদের সকলের মশার কামড়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে। বর্তমান সময়ে মশার উপদ্রব একটু বেশি দেখা যায়। অনেক মশা আছে যেগুলো কামড়ালে আমাদের শরীরের দাগ হয়ে যায় বিশেষ করে যারা একটু ফর্সা মানুষ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি বেশি লক্ষ্য করা যায়। মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় জানা থাকলে আমরা খুব সহজেই আমাদের শরীর থেকে এই দাগ দূর করতে পারবো।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয় - ১০ টি ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় অবলম্বন করার জন্য আমাদের বেশ কিছু করণীয় এবং বর্জনীয় রয়েছে। অবশ্যই সেগুলো মেনে চলতে হবে নিচে মশা কামড়ালে কি করবেন এবং কি করবেন না সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।

যে কাজগুলো করতে পারেনঃ

১। মশার কামড় থেকে নিজেকে প্রতিরোধ করার জন্য মসকুইটো রিপিলেন্ট ক্রিম শরীরের ব্যবহার করতে পারেন এতে করে মশার কামড় থেকে নিজেকে প্রতিরোধ করতে পারবেন।

২। মশা কামড়ালে যদি আপনার শরীরের দাগ সৃষ্টি হয় তাহলে স্টেরয়েড মলম ব্যবহার করতে পারেন যেমন ইমোভেট ক্রিম দিনে দুই তিনবার ব্যবহার করতে হবে এভাবে সাত দিন ব্যবহার করলে দাগ অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।

৩। অবশ্যই মশার কামড় থেকে বাঁচতে হলে নিজেকে মশারির ভেতরে রাখতে হবে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টাঙিয়ে এরপরে ঘুমাতে হবে।

যেগুলো থেকে বিরত থাকতে হবেঃ

১। মশা কামড়ালে অনেক সময় আমাদের শরীরের সেই অংশটুকু ফুলে যায়। তাই সেই অংশ চুলকানো যাবে না চুলকালে দাগটি আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে।

২। যদি ভালো মলম ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই কোন ভাল ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন অথবা যারা অভিজ্ঞতাশীল মানুষ এর মধ্যে ফার্মেসির অনেক বিক্রেতা রয়েছে তাদের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করবেন।

মশার কামড়ে ফুলে গেলে করণীয়

অনেক সময় দেখা যায় আমাদের শরীরে যে অংশ মশা কামড়ায় সে অংশটির লাল হয়ে ফুলে যায়। সে ক্ষেত্রে মশার কামড়ে ফুলে গেলে করণীয় সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই জানতে হবে। মশার কামড়ে বিভিন্ন রকম রোগ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে তার মধ্যে মারাত্মক রোগ ডেঙ্গু অন্যতম। মশার কামড়ে ফুলে গেলে করণীয় কি উল্লেখ করা হলো।

১। আপনার শরীরের কোন অংশে যদি মশা কামড়ায় এবং সেই অংশটি যদি ফুলে যায় এবং ব্যথা অনুভব হয় তাহলে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বরফ চেপে ধরে রাখুন। তাহলে ফোলা ভাব অনেকটা কমে যাবে।

২। আমরা সকলেই জানি যে এলোভেরার মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ এটি আমাদের বিভিন্ন রকম ক্ষত এবং ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে। মশা কামড়ালে সেই স্থানের ফোলা ভাব কমাতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন।

৩। যে স্থানে মশা কামড়েছে সেই স্থানে পেঁয়াজের রস দিলে এ জ্বালা অনেকটাই কমে যাবে বিশেষ করে মশার কামড়ের ব্যথা ও ফোলা ভাব কমাতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

৪। আমরা জানি যে মধুর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে এবং মধু ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান করতে ব্যবহার করা হয়। ত্বকের প্রদাহ কমাতে বিশেষ করে মশার কামড়ের ব্যথা ও ফুলে যাওয়া কমাতে অল্প পরিমাণে মধু যেই স্থানে মশা কামড়েছে সেই স্থানে লাগাতে হবে।

৫। বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এটি মশার কামড়ের ব্যথা এবং চুলকানি দূর করতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বেকিং সোডা ভালোভাবে পানি দিয়ে ফুটিয়ে সেগুলোকে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন।

মশা কামড় থেকে বাঁচার উপায় - বাচ্চাদের মশার কামড়

বর্তমান সময়ে মশার উপদ্রব্য অনেক বেশি হয়েছে। রাতের বেলা তো রয়েছেই দিনের বেলা ও মশার উপদ্রব্য থেকে বাঁচা যায় না। সেজন্য আমাদেরকে অবশ্যই মশার কামড় থেকে বাঁচার উপায় গুলো জানতে হবে বিশেষ করে বাচ্চাদের মশার কামড় থেকে বাঁচাতে হবে। আপনাদের বাচ্চাদের মশার কামড় থেকে রক্ষা করার উপায় আজকে জানাবো।

মশার কামড় থেকে বাঁচার উপায়ঃ

বাড়ির আশেপাশে পানি জমতে দেওয়া যাবেনা - বেশিরভাগ সময় বাড়ির আশেপাশে ময়লা পানি জমে সেখান থেকে মশা সৃষ্টি হয়। যদি মশার উপদ্রব্য অনেক বেশি হয় তাহলে প্রতিদিন সে পানি পরিষ্কার করতে হবে আর যদি মোটামুটি হয় তাহলে তিনদিন পর পর পানি পরিষ্কার করতে হবে।

ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে - সব সময় আমাদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আমরা যেখানে ময়লা ফেলে সে পাত্র গুলোকে ঢেকে রাখতে হবে এবং নিয়মিত সেটিকে পরিষ্কার করতে হবে। টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।

বরফ ব্যবহার করতে পারেন - মশা কামড়ালে ত্বকে বরফ ব্যবহার করতে পারেন। মশা কামড়ানোর সাথে সাথে যদি তাৎক্ষণিকভাবে বড়ত্বকে লাগানো যায় তাহলে এটি ব্যথা ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করবে। এরপরে পাঁচ মিনিট সেই স্থানে বরফ চেপে ধরে রাখতে হবে।

আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের খিচুনি হওয়ার ৫ টি লক্ষণ - খিচুনি হওয়ার নয়টি লক্ষণ

দারুচিনির তেল ব্যবহার করতে পারেন - দারুচিনির তেল পাওয়া যায় আপনি যদি কয়েক ফোটা দারুচিনির তেল শরীরে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এটি আপনার শরীরের জন্য উপকারী হবে। অথবা আপনি চাইলে অন্যান্য তেল ও মশ্চারাইজারের সঙ্গে মিশিয়ে এই তেল ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এই তেলের কড়া গন্ধে মশা কাছে আসতে চাই না।

টিট্রি অয়েল - টিট্রি অয়েল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারিতা রয়েছে। টিট্রি অয়েল মশার কামড় প্রতিরোধে সহযোগিতা করে থাকে। এছাড়া কোথাও ফুলে গেলে কিংবা ব্যাথা হলে টিট্রি অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে।

নিম পাতার তেল ব্যবহার করা যায় - আমরা জানি যে নিম পাতার গন্ধ মুসা সহ্য করতে পারে না। তাই আপনি যদি নিম পাতার তেল আপনার শরীরে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে এটি আপনাকে মশার কামড় থেকে রক্ষা করবে।

লেবু ব্যবহার করতে পারেন - লেবু মশা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে থাকে। ত্বকে কয়েক ফোটা লেবুর রস ব্যবহার করলে এটি আপনাকে মশা থেকে রক্ষা করবে।

রসুন ব্যবহার করা যেতে পারে - মশার কামড় থেকে বাঁচতে রসুন ও লবঙ্গ সেবন করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি তোকে রসুনের তেল মেখে বাইরে যেতে পারেন তাহলে এটি আপনাকে মশার কামড় থেকে বাঁচাতে সাহায্য করবে।

মশার কামড়ে এলার্জি

মশা কামড়ের ফলে আমাদের শরীরের দাগ হয়ে যায় সাধারণত মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় নিয়ে আমরা আজকে আলোচনা করেছি। অনেকের মশার কামড়ে এলার্জি রয়েছে। মশার কামড়ে এলার্জি হলে আমাদেরকে কি করতে হবে? এই বিষয়ে জানা থাকলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হয়।

১। মশা কামড়ানোর ফলে এলার্জি না হয় সেজন্য তাৎক্ষণিকভাবে যে স্থানে মশা কামড়াবে সেখানে বরফ দিয়ে চেপে ধরে রাখতে হবে। বরফ দিয়ে চেপে ধরে রাখলে অনেকটাই আরমবোধ করা যায়।

২। মশার কামড়ে যদি এলার্জি না চান তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে মধু ব্যবহার করতে পারেন। মধুর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকমের পুষ্টি উপাদান যা আমাদের ত্বকের সমস্যা গুলোকে সমাধান করে থাকে।

৩। মশার কামড় থেকে এলার্জি না হয় সেই জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে এলোভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। যে স্থানে মশা কামড়েছে সেই স্থানে এলোভেরা জেল ভালো হবে ব্যবহার করলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়।

৪। মশা কামড়ের ফলে এলার্জি থেকে বেঁচে থাকতে হলে বেকিং সোডা এবং পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন। দুইটি পদার্থকে আলাদাভাবে ব্যবহার করতে হবে একসঙ্গে নয়। তাৎক্ষণিকভাবে মশার কামড়ের স্থানে ব্যবহার করলে উপকারিতা পাওয়া যায়।

মানুষের কামড়ের দাগ

অনেক সময় ছোট বাচ্চারা আমাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে কামড়ে থাকে। যার ফলে আমাদের শরীরের মানুষের কামড়ের দাগ সৃষ্টি হয়ে যায়। মানুষের কামড়ের দাগ দূর করার জন্য অনেকেই বিভিন্ন রকমের মলম ব্যবহার করে থাকে আবার অনেকেই বিভিন্ন রকমের পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে।

মানুষের কামড়ের দাগ দূর করার জন্য একটি গোটা লেবু চিপে নিবেন এরপরে একটি মাঝারি সাইজের শসা ভালোভাবে রস করে মিশিয়ে নিতে হবে এরপর কামরের স্থানে ভালো হবে আলতো করে ঘষে নিতে হবে। আপনি যদি এই পদ্ধতিতে কয়েকদিন করে থাকেন তাহলে কামরের দাগ দূর হয়ে যাবে আশা করা যায়।

এছাড়া কামড়ের দাগ দূর করার জন্য আপনি অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। যে স্থানে কামড়ের দাগ রয়েছে সেই স্থানে এলোভেরা জেল ভালোভাবে ঘষতে হবে। কয়েকদিন যদি অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে ঘষা যায় তাহলে কামড়ের দাগ দূর হয়ে যাবে।

ভিটামিন সি ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। কামরের দাগ দূর করার ক্ষেত্রে ভিটামিন সি ক্রিম এর উপকারিতা রয়েছে। যে স্থানে কামড়ের দাগ রয়েছে সেখানে ভিটামিন সি ক্রিম ভালোভাবে ব্যবহার করতে হবে।

মশার কামড় থেকে বাঁচার ক্রিম

আমরা ইতিমধ্যেই মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায় সম্পর্কে জেনেছি। অতিরিক্ত মশার কামড় থেকে বাঁচার ক্রিম গুলো ব্যবহার করলে আমাদের শরীরের মশা কামড়াবে না। বিশেষ করে যদি গ্রাম অঞ্চলে অথবা এমন কোথাও ঘুরতে যায় যেখানে মশার উপদ্রব্য অনেক বেশি সেখানে মশার কামড় থেকে বাঁচার ক্রিম ব্যবহার করা উত্তম।

মশার কামড় থেকে বাঁচার ক্রিম গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো অডোমস ক্রিম। এটি সাধারণত মশার নিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এতে কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যেগুলোর কারণে শরীরে মশা কামড়ানো সাহস পায় না। যদি কামড়ায় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে মশা মরে যায়।

আরো পড়ুনঃ সকালে ব্যায়াম করার ১০টি উপকারিতা - সকালে ব্যায়াম করার দশটি নিয়ম

এই ক্রিমটি একটু হাতে নিয়ে ভালোভাবে নাক চোখ এবং ঠোঁট ব্যতীত শরীরের যে অংশগুলো জামার বাইরে থাকে সে অংশগুলোতে ঘষে নিতে হবে। মাখার পরে ভালোভাবে হাতের কব্জি ধুয়ে ফেলতে হবে। এ ক্রিম মাখার পরে হাত না থেকে কিছু খাওয়া যাবে না।

আমাদের শেষ কথাঃ মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায়

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে মশার কামড়ের দাগ দূর করার উপায়, মশার কামড় থেকে বাঁচার ক্রিম, মশার কামড়ে এলার্জি, বাচ্চাদের মশার কামড়, মশা কামড় থেকে বাঁচার উপায়, মশার কামড়ে ফুলে গেলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

বিশেষ করে আপনি যদি অতিরিক্ত মশার উপদ্রব্য থেকে বাঁচতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে বিষয়গুলো জেনে নিন।২০৭৯১

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url