ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি - ঘৃতকুমারী পরিচর্যা - টবে ঘৃতকুমারী চাষ

 ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি অনুযায়ী সঠিকভাবে ঘৃতকুমারী চাষ করতে পারলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। তাই আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে ঘৃতকুমারী চাষ করতে চান, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। আপনি যদি ভালোভাবে ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে রাখেন তাহলে বাণিজ্যিকভাবে ঘৃতকুমারী চাষ করতে পারবেন। 

পেজ সূচিপত্র: ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি - ঘৃতকুমারী পরিচর্যা - টবে ঘৃতকুমারী চাষ

উপস্থাপনা 

বর্তমানে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে ঘৃতকুমারী চাষ করে থাকেন। চাষ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে ভীতু কুমারের প্রচুর পরিমাণে চাহিদা থাকায় খুব সহজেই ঘৃতকুমারী বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা যায়। আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেন তাহলে বিপণনে কোন ধরনের সমস্যা হবে না। বিশেষ করে হারবাল ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানিগুলো চড়া মূল্যে ঘৃতকুমারী ক্রয় করে থাকে। যাইহোক ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। 

ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি

ঘৃতকুমারী বাণিজ্যিকভাবে চাষ করতে চাইলে নিম্নবর্ণিত, ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। তাই ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য মনোযোগ সহকারে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো পড়তে থাকুন। ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি বর্ণনা করার পাশাপাশি এই আর্টিকেলটিতে ঘৃতকুমারী পরিচর্যা এবং টবে ঘৃতকুমারী চাষ করার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তো দেরি না করে আসুন দেখে নেয়া যাক, ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি। 
  • জমি নির্বাচন: বাংলাদেশের সব জায়গাতেই ঘৃতকুমারী চাষ করা যায়। এটেল ও দোয়াশ এবং বেলে মাটি সব ধরনের মাটিতেই এলোভেরা চাষ করা যায়। তাই এলোভেরা চাষ করার জন্য যে কোন জমি নির্বাচন করা যেতে পারে। 
  • জমি প্রস্তুত করণ: ঘৃতকুমারী চাষ করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে ভালোভাবে জমি প্রস্তুত করতে হবে। সঠিকভাবে জমি প্রস্তুত না করলে ভালো ফলন হওয়া সম্ভব নয়। তাই আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে ঘৃতকুমারী চাষ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে সর্ব প্রথম সঠিকভাবে জমি প্রস্তুত করতে হবে। জমি প্রস্তুত করার জন্য হেক্টর প্রতি আপনাকে ২২৫ থেকে ২৫০ কেজি টিএসপি সার প্রয়োগ করতে হবে এবং ৭৫ থেকে ১০০ কেজি এমওপি সাড়ে দিতে হবে। 
  • চারা রোপণ: সঠিকভাবে জমিয়ে প্রস্তুত করা হয়ে গেলে সঠিক নিয়মে আপনাকে ছাড়া রোপন করতে হবে। চারা রোপন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে, পুরোপুরি ভাবে প্রস্তুত থাকে। কেননা জমি যদি পুরোপুরি প্রস্তুত না থাকে সেক্ষেত্রে রোপণকৃত চারা মারা যেতে পারে। 
  • চারা রোপনের উপযুক্ত সময়: বছরের যেকোনো সময় ঘৃতকুমারীর চারারোপণ করা যায়। তাই চারারোপণ করার জন্য নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। যে কোন সময় আপনি ঘৃতকুমারীর চারা রোপন করতে পারেন। তবে শীতকালে এবং বর্ষাকালে চারা রোপন না করাই উত্তম। বাংলা মাসের কার্তিক ও অগ্রহায়ণ চারা রোপণের উপযুক্ত সময়। 
  • চারা রোপনের পদ্ধতি: চারা রোপন করার সময় উভয় চারার মাঝে নির্দিষ্ট পরিমাণে ফাঁকা রাখতে হবে। একটাই থেকে আরেক সাইডের দূরত্ব কমপক্ষে ৭ ইঞ্চি হতে হবে এবং প্রতি সারিতে ছয় ইঞ্চি পর পর চারা রোপন করতে হবে। 
  • সার ও সেচ: চারা রোপন করার পরে নির্দিষ্ট সময় পর পর স্যার ও সেজ প্রদান করতে হবে সঠিক সময়ে যদি আপনি দান করেন তাহলে ভালো ফলন নাও হতে পারে। তাই সময় মতো সার এবং শেষ প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

ঘৃতকুমারী পরিচর্যা

সঠিকভাবে ঘৃতকুমারী পরিচর্যা না করলে কিন্তু ঘৃতকুমারী গাছ মারা যেতে পারে। সব সময় ঘৃতকুমারী পরিচর্যা করতে হবে। ঘৃতকুমারী পরিচর্যা করার জন্য নিম্ন বর্ণিত বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে। আপনি যদি নিচে উল্লেখিত ঘৃতকুমারী পরিচর্যা পদ্ধতি অনুসরণ করেন তাহলে ভালো ফলাফল পাবেন বলে আশা করি। 
  • আগাছা পরিষ্কার করা: ঘৃতকুমারীর বাগানে যদি আগাছা জন্মে তাহলে ঘৃতকুমারী গাছ সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে না। তাই ঘৃতকুমারীর বাগানে কখনোই আগাছা হতে দেয়া যাবে না। অল্প পরিমাণে আগাছা দেখা দিলেই পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। আর আপনি যদি সময়মতো আগাছা পরিষ্কার না করেন তাহলে কীটনাশক কিংবা সার প্রয়োগ করে লাভ হবে না। কেননা স্যারের অধিকাংশই আগাছা গ্রহণ করে ফেলবে। অবশ্যই আপনাকে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। 
  • নিয়মিত সার প্রয়োগ করা: যেকোনো ফসলের ভালো ফলন পেতে হলে সঠিক সময়ে উপযুক্ত সার প্রয়োগ করতে হবে। আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক সার প্রয়োগ করতে না পারেন তাহলে ভালো ফলন হবে না। প্রয়োজনে আপনি স্থানীয় কৃষি অফিসারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, এবং তার কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন যে কোন সময় সার প্রয়োগ করা ভালো হবে।সাধারণত শেষ দেয়ার পূর্বে সার প্রয়োগ করলে তা অধিক কার্যকর হয়।
  • কীটনাশক প্রয়োগ করা: যদিও ঘৃতকুমারীর গাছে তেমন কোন পোকামাকড় দেখা যায় না তবে মাঝে মাঝে ছাতরা বা জাব জাতীয় পোকা আক্রমণ করতে পারে। এ ধরনের প্রকার উপদ্রব দেখলে অবশ্যই আপনাকে সাথে সাথেই কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
  • রোগ বালাইয়ের চিকিৎসা করা: ঘৃতকুমারী গাছের একটি কমন রোগ রয়েছে। আর সেই রোগটি হলো গোড়া পচা রোগ। যদি কখনো এই রোগ আপনার খেতে দেখা দেয় তাহলে তৎক্ষণাৎ এই রোগের চিকিৎসা করতে হবে। বিশেষ করে বর্ষাকালে পানি জমলে এই ধরনের রোগ দেখা দেয়। এই রোগ দেখা দিলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।  
  • সেচ দেয়া: ঘৃতকুমারী যেহেতু রসালো উদ্ভিদ তাই ঘৃতকুমারীর বাগানে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। নিয়মিত সেচ না দিলে ভালো ফলন হবে না। তাই সবসময় নজর রাখতে হবে যে ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে কিনা, শুকিয়ে যাওয়ার পূর্বেই পানি দিতে হবে। 

টবে ঘৃতকুমারী চাষ

টবে ঘৃতকুমারী চাষ করার আলাদা কোনো পদ্ধতি নেই। উপর উল্লেখিত ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করেই আপনি টবে ঘৃতকুমারী চাষ করতে পারবেন। তাই টবে ঘৃতকুমারী চাষ করার জন্য আপনাকে ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।  টবে ঘৃতকুমারী চাষ করার ক্ষেত্রে আপনাকে টবে ভালোভাবে মাটির প্রস্তুত করে নিতে হবে। টবে ঘৃতকুমারী চাষ করার জন্য মাটি প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, টবে যেন যথেষ্ট পরিমাণে মাটি রাখা যায়। 

কেননা ঘৃতকুমারী রসালো উদ্ভিদ হওয়ায় অন্যান্য উদ্ভিদের চেয়ে এই উদ্ভিদের পানির চাহিদা বেশি। তাই যথেষ্ট পরিমাণে মাটি না থাকলে পরিমিত পরিমাণে পানির সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। যাইহোক উপরে বর্ণিত জমি প্রস্তুত করার পদ্ধতি অনুসরণ করে টবে মাটি প্রস্তুত করবেন। এবং নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। সঠিক নিয়মে যদি আপনি টবে ঘৃতকুমারী চাষ করেন তাহলে আশা করা যায় ভালো ফলাফল পাবেন।

উপসংহার

প্রাকৃতিকভাবে ভেষজ গুণসম্পন্ন এই উদ্ভিদটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারে আসে। আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে ঘৃতকুমারী চাষ নাও করতে চান এরপরেও আপনার উচিত হবে সামান্য পরিসরে বাড়ির আঙ্গিনায় ঘৃতকুমারী চাষ করা। কেননা আপনার হাতের কাছে যদি ঘৃতকুমারী থাকে তাহলে আপনি এর দ্বারা বিভিন্নভাবে উপকৃত হতে পারবেন। 
চাইলে আপনি উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে খুব সহজেই এলোভেরা চাষ করতে পারবেন। ঘৃতকুমারী চাষ পদ্ধতি সংক্রান্ত তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার ভালো লেগেছে। যদি আপনার নিকটে তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে সকলের সাথে শেয়ার করবেন। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url