ব্রেইন ক্যানসার- কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়

আরো পড়ুনঃ বান্ধ্যত্ব রোগ কি? কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা

মানুষের শরীরের সবচেয়ে জটিল, সংবেদনপশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থান হলো মস্তিস্ক। মানুষের চিন্তা ভাবনা থেকে শুরু করে চলাফেরা, অনুভূতি, স্মৃতিসহ শরীরের সকল অঙ্গের নিয়ন্ত্রণের মূল চালিকা শক্তি মস্তিস্ক।

আর মাথা বা মস্তিস্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে যদি মারাত্মক কোন ধরণের সমস্যা দেখা দেয়, তবে এর প্রভাব পড়ে পুরো শরীরে। ব্রেইন ক্যানসার এমনই এক মরণব্যাধি, যার জন্ম হয় মস্তিস্কের কোষে এবং আস্তে আস্তে মানুষের জীবনকে গ্রাস করে নেয়।

আপনাদের মধ্যে অনেকে ব্রেইন ক্যানসার সম্পর্কে জানতে গুগলে সার্চ করেন। তাই, আজকে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, ব্রেইন ক্যানসার কি? এর কারণ, লক্ষণ এবং এর চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।

ব্রেইন ক্যানসার কি?- What is brain cancer?

ব্রেইন ক্যানসার মূলত মানুষের মস্তিস্কের কোষে অনিয়ন্ত্রিতভাবে তৈরি হওয়া একটি রোগ। যার প্রভাবে কোষগুলো তার স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণকে হারিয়ে ফেলে এবং বিভাজিত হতে থাকে, যা কোন এক সময় রূপান্তরিত হয় টিউমারে।

এই টিউমার যদি ক্যানসারযুক্ত বা ম্যালিন্যান্ট হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় ব্রেইন ক্যানসার। তবে, মানুষের মস্তিস্কে সাধারণর দুই ধরণের টিউমার হয়ে থাকে। যেমন-

  • প্রাইমারি টিউমার- প্রাইমারি টিউমারটি সাধারণত মস্তিস্কেই উৎপত্তি লাভ করে। যেমন- গ্লিওব্লাস্টোমা, অ্যাস্ট্রোসাইটোমা, মেনিঞ্জিওমা ইত্যাদি।
  • মেটাস্টেটিক বা সেকেন্ডারি টিউমার- এই টিউমারটি শরীরের অন্য কোথাও ক্যানসার হলে সেখান থেকে ছড়িয়ে মস্তিস্কে পৌছায়। যেমন- কিডিনি, স্তন, ফুসফুস ইত্যাদি।
প্রাইমারি ব্রেইন ক্যানসার যদিও অপেক্ষাকৃত কম দেখা গেলেও, মেটাস্টেটিক বা সেকেন্ডারি ক্যানসার অধিক প্রচলিত।

ব্রেইন ক্যানসার কিভাবে হয়?- How does brain cancer occur?

কোন কারণে মস্তিস্কের কোষে যদি জিনগত পরিবর্তন বা মিউটেশন (mutation) ঘটে থাকে, সেক্ষেত্রে কোষগুলো নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বিভাজিত হতে থাকে। আর এই কোষগুলো স্বাভাবিকভাবে যদি পূর্বের মত কাজ না কের, অস্বাভাবিক আচরণ করে এবং এক পর্যায়ে সেটি গঠন করে টিউমার।

আর এই টিউমারগুলি এক সময় মানুষের মস্তিস্কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশে চাপ ফেলতে পারে, নষ্ট করে ফেলতে পারে আশপাশের টিস্যুগুলোকে এবং ব্যহত করতে পারে মানুষের শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমকে।

ব্রেইন ক্যানসারের কারণ কি?- What causes brain cancer?

যদিও, বিজ্ঞানীরা পুরোপুরিভাবে ব্রেইন ক্যানসারের সু-নির্দিষ্ট কোন কারণ নির্ধারণ করতে পারেননি, তবে তারা বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে ব্রেইন ক্যানসারের কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ বা সম্ভাব্য উৎস চিহ্নিত করতে পেরেছেন। যেমন-

*** দুর্বল ইমিউন সিস্টেম- যাদের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের ক্যানসারের কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হয়ে পড়ে।

*** পরিবারিক ভাবে বা জিনগত কারণে- আপনার পরিবারের কেউ যদি পূর্বে ব্রেইন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকলে, আপনার বা পরবর্তী প্রজন্মের এই রোগের ঝুকি বাড়ে।

*** রেডিয়েশনের সংস্পর্শ- কেউ যদি দীর্ঘদিন যাবত অতিরিক্ত এক্স- রে বা আয়নাইজিং রেডিয়েশনের এক্সপোজারে থাকেন, তাহলে তার ক্যানসার রোগের ঝুকি বেড়ে যায়।

*** বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ- কেউ যদি দীর্ঘদিন যাবত অতিরিক্ত অতিরিক্ত পরিমাণে পারদ, লেড, আর্সেনিক বা শিল্প কারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে থাকলে, তার টিউমারের ঝুকি বাড়ে।

*** বয়স ও লিঙ্গ- যদিও ব্রেইন ক্যানসার যে কোন বয়স ও লিঙ্গের হতে পারে, তবে মাঝ বয়স থেকে উপরের বয়সের ক্ষেত্রে এটি বেশি হয়। নির্দিষ্ট ধরণের কিছু টিউমার পুরুষদের বেশি, আবার কিছু নারী দেহে বেশি হয়।

ব্রেইন ক্যানসারের লক্ষণ কি?- What are the symptoms of brain cancer?

ব্রেইন ক্যানসারের অনেক লক্ষণ রয়েছে, যেগুলো অনেকে সময় অন্য কোন সাধারণ রোগের সঙ্গে মিলে যেতে পারে, তাই প্রাথমিক অবস্থায় এর লক্ষণ অনেক সময় বুঝতে পারা যায় না। তবে, নিম্নের লক্ষণগুলো দীর্ঘ সময় ধরে দেখাগেলে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ। যেমন- 

** মাথাব্যথা- ব্রেইন টিউমারের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো, সকালে ঘুম থেকে উঠেই মাথা ব্যথা শুরু হওয়া। আর এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে, যা সাধারণ ওষুধে কোন কাজ করতে নাও পারে।

** মনোযোগের ঘাটতি বা স্মৃতিভ্রষ্টতা- এটি সাধারণ কোন স্মৃতিকে ভুলে যাওয়া নয়, বড় বড় ঘটনাকে মনে রাখতে না পারা এবং মানসিক বিভ্রান্তি তৈরি হওয়া টিউমারের লক্ষণ নির্দেশ করে।

** ভারসাম্যহীনভাবে চলাচলফেরা- হাটতে গিয়ে হঠাত করে পাড়ে যাওয়া, এক পাশে অবশভাব লাগা। এই সমস্যাগুলো মস্তিস্কের ব্যালেন্স সিস্টেমের সমস্যা বোঝাতে পারে।

** দৃষ্টিশক্তির সমস্যা- কোন সময় হঠাত করে চোখে ঝাপসা দেখা, অন্ধকারে কম দেখা বা ডাবল দেখা, এইগুলো ব্রেইন ক্যানসারের লক্ষণকে বহন করে।

** খিচুনি বা সিজার- যাদের আগে কখনো খিচুনির ইতিহাস ছিল না, কিন্তু হঠাত করে খিচুনি শুরু হলে, এটি ব্রেইন ক্যানসারের লক্ষণ হতে লারে।

** বমি বমি ভাব ও বমি- বিশেষ করে যদি খালি পেটে বমি হয় এবং এর সঙ্গে যুক্ত থাকে মাথাব্যথা, তাহলে এটি হতে পারে চিন্তার কারণ।

ব্রেইন ক্যানসার কিভাবে নির্ণয় করা হয়?- How is brain cancer diagnosed?

সঠিকভাবে ব্রেইন ক্যানসার নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকেরা সাহায্য নেন বিভিন্ন পরীক্ষা ও স্কানের। আর সকল পরীক্ষার নির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্য থাকে এবং এটি রোগীর অবস্থার উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়। নিম্নে পরীক্ষাগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো- 

** Magnetic Resonance Imaging (MRI)- এটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রচলিত পরীক্ষা, যা ব্রেইনের ছবি বিস্তারিত প্রদান করে। (MRI) স্কানের মাধ্যমে টিউমারটি ব্রেনের কোথায় আছে, তার আকার ও গঠন কেমন তা নির্ণয় করা যায়। স্পষ্ট ছবি পাওয়ার জন্য, প্রয়োজনে Contrast dye ব্যবহার করা হয়।

আরো পড়ুনঃ হরমোন মানুষের দেহের গোপন নিয়ন্ত্রক

** Neurological Test (নিউরোলজিক্যাল পরীক্ষা)- চিকিতসকেরা এই পরীক্ষার মাধ্যমে, রোগীর স্নায়ুবিক কার্যকলাপ যাচাই করে দেখেন। যেমন- স্মৃতি, শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, ভারসাম্য, সমন্বয় এবং প্রতিক্রিয়া। আর এগুলো যাচাইয়ের মাধ্যমে বোঝা যায় ব্রেনের কোন অংশে সমস্যা হয়েছে। 

** Piopsy বা টিস্যু পরীক্ষা- টিউমারের প্রকৃতি বোঝার জন্য বায়োপসি হল সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। এর মাধ্যমে ব্রেনের টিউমার থেকে ছোট একটি অংশ নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। পরীক্ষা করে বঝা যায়, টিউমারটি ক্যানসার (malignant) কিনা এবং সেটির গ্রেট কি?

** Positron Emission Tomography (PET Scan)- এই পরীক্ষাটি সাধারণত শরীরের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করে। ক্যানসারের কোষ সাধারণত অন্য কোষের তুলনাই বেশি সক্রিয়। তাই এটি PET স্ক্যানে ধরা পড়ে। তাছাড়া, এটি ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে কিনা, তা যানতেও সাহায্য করে।

** Computed Tomography Scan (CT Scan)- CT স্ক্যানও হল চিত্রায়ণ একটি পদ্ধতি, যা একাধিক এক্সেরের দ্বারা ব্রেন কাঠামো বিশ্লেষণ করে। এটি মূলত টিউমার ও রক্তপাত সনাক্ত করতে সাহায্য করে এবং কখনো কখনো ব্যবহার করা হয় MRI এর বিকল্প হিসাবেও।

উপরে উল্লেখিত পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকেরা নির্ধারণ করেন, ব্রেইন ক্যানসারের ধরণ, গ্রেট, অবস্থান, বিস্তারের মাত্রা সম্পর্কে এবং পরবর্তী সময়ে সঠিক চিকিতসা পদ্ধতি বা পরিকল্পনা গ্রহন করেন। ক্যানসারের চিকিৎসার প্রথম ধাপই হলো, নির্ভুল এবং সময়মত নির্ণয়।

ব্রেইন ক্যানসারের চিকিৎসা পদ্ধতি কি?- What is the treatment for brain cancer?

ব্রেইন ক্যানসারের চিকিৎসা অনেকটা নির্ভর করে টিউমারের ধরণ, আকার, অবস্থান এবং রোগীরর শারীরিক অবস্থা উপর। তবে, সাধারণত সচারচর নিম্নের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা হয়ে থাকে। যেমন-

** অস্ত্রোপচার- (Surgery)- যদি টিউমারের অবস্থান এমন কোন স্থানে থাকে, যেখানে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব, সেক্ষেত্রে সেটি অপসারণ করা হয়। কখনো কখনো এটি সম্পূর্ণ বা আংশিক অপসারণ করা হয়।

** রেডিওথেরাপি (Radiotherapy)- এই পদ্ধতিতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কোন রেডিয়েশন দিয়ে টিউমারের কোসকে ধ্বংস করা হয়। এটি করা হয় অস্ত্রোপচারে আগে কিংবা পরে।

** কেমোথেরাপি (Chemotherapy)- এই পদ্ধতিটি ওষুধের মাধ্যমে টিউমারের কোষ ধ্বংস করা। এটি করা হয় কখনো মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট, আবার কখনো ইনজেকশনের মাধ্যমে।

*** টার্গেট থেরাপি (Targeted therapy)- এই পদ্ধতির মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোন জিন বা প্রোটিনকে লক্ষ করে, ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধিকে প্রতিরোধ করা হয়।

** ইমিইনোথেরাপি (Immunotherapy)- এই পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করা হয়, ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করানোর জন্য।

চিকিৎসার পর রোগীর বিশেষ যত্ন- Special patient care after treatment

একজন ব্রেইন ক্যানসারের রোগীর চিকিৎসার পর বিশেষভাবে যত্ন নেওয়া অত্যান্ত জরুরি। এর মধ্যে অন্যতম হল- 

  • মানসিকভাবে সমর্থন।
  • রোগের নিয়মিতভাবে ফলোআপ।
  • পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম করা।
  • বিষণ্ণতা ও উদ্বেগ কমানোর জন্য মনোবিদের সাহায্য নেয়া।
  •  রিহ্যাবিলিটেশন থেরাপি (ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি ইত্যাদি।

ব্রেইন ক্যানসার রোধে সতর্কতা- Precautions to prevent brain cancer

কোন রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করা অনেকটা সহজ। তাই আমাদের ব্রেইন ক্যানসার হওয়ার আগেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত। আর এইজন্য নিম্নের পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে- 

  • কোন লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউরোলজিস্ট দেখান।
  • দীর্ঘদিনের খিঁচুনি এবং মাথাব্যথাকে অবহেলা না করে, পরীক্ষা করা উচিৎ।
  • জীবনজাপন স্বাস্থ্যকর উপায়ে করা এবং টক্সিন বা ক্ষতিকর কেমিক্যাল এডিয়ে চলা।
  • নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা, বিশেষ করে কারো পরিবারে যদি ক্যানসারের ইতিহাস থেকে থাকে।

ভয়াবহ রোগ ব্রেইন ক্যানসারের- শেষকথা ঃ Brain cancer is a terrible disease.

যদিও, ব্রেইন ক্যানসার অত্যান্ত ভয়াবহ একটি রোগ, তবে যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহন করা যায়, তাহলে ক্যানসারের রোগীও দীর্ঘদিন ধরে ভালো থকতে পারে। বর্তমান প্রযুক্তির অগ্রগতি হওয়ার কারণে, চিকিৎসা পদ্ধতিরও অনেক উন্নতি হয়েছে, যা রোগ নিরাময়ে অনেক কার্যকর। প্রাথমিক নির্ণয়, সচেতনতা এবং মানসিক শক্তিই এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সবচেয়ে বড় হাতিহার।

প্রিয় পাঠক পাঠিকাগণ, আমরা আশাকরি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পেরেছি, "ব্রেইন ক্যানসারের কারণ, লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়" সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যা, আপনাদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।

আরো পড়ুনঃ মেয়েদের জরায়ু ক্যানসারের কারণ ও লক্ষণ কি?

আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালোলাগে এবং উপকারি বলে মনে হয়, তাহলে এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করবেন, যাতে তারাও উপকৃত হন। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেল পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url